মোঃ সুমন মোল্লা ভাংগা প্রতিনিধি
ফরিদপুরের ভাঙ্গায় ১০ বছরের শিশু নাতিকে ধর্ষন করেছে পাশের বাড়ি দাদা দেলোয়ার মোল্লা(৫৫)। ধর্ষণের ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে সালিশি বৈঠকে প্রভাবশালী দাদা দেলোয়ার মোল্লাকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করেছে স্থানীয় মাদবরেরা। এঘটনায় বুধবার দুপুরে ভাঙ্গা উপজেলার নুরুল্লাগঞ্জ ইউনিয়নের হরুপদিয়া গ্রামে ধর্ষক দেলোয়ার মোল্লার বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে গ্রামবাসী। দাদা দেলোয়ার মোল্লা(৫৫) হরুপদিয়া গ্রামের দলা মোল্লার পুত্র। ধর্ষণের ঘটনার
সংবাদ পেয়ে ভাঙ্গা থানার ওসি সহ একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শিশু ও তার মা-বাবার জবানবন্দি রেকর্ড করেন। পরে তাদেরকে ভাঙ্গা থানায় নিয়ে আসে। ধর্ষণের শিকার শিশুর বাবা রবিউল মোল্লা বাদী হয়ে ভাঙ্গা থানায় একটি ধর্ষণের মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
এবিষয় ধর্ষনের শিকার শিশুর বাবা রবিউল মোল্লা ও তার মা জানায়, সোমবার দুপুরে আমরা নতুন ধানের শিন্নি রান্না করেছি । পাশের বাড়ির সম্পর্কে দাদিকে শিন্নি দিতে আমার মেয়েকে পাঠাই। দাদি ঘুমানো থাকায় মেয়ে ঘরের ভিতরে প্রবেশ করার সাথে সাথে তাকে জোরপূর্বক মুখ বন্ধ করে দাদা ধর্ষন করে। মেয়ে কাউকে কিছু না বলার হুমকি দেয় এবং মেরে ফেলার হুমকি দেয় দেলোয়ার মোল্লা। মেয়েটি বাড়ি এসে পুরো ঘটনা তার মায়ের কাছে বলে দেয় এবং দেখায়। যাহা বলার মত ভাষা আমাদের নাই। আমরা গরীব মানুষ, আমরা দেলোয়ারের শাস্তি চাই এবং ফাঁসি চাই।
ঘটনার পরদিন মঙ্গলবার রাতে দেলোয়ারের বাড়িতে একটি সালিশ বৈঠক হয়। সেখানে মাদবরেরা দেলোয়ারকে দুই লাখ টাকার জরিমানা করেন । পরে আমাকে একটি সাদা ষ্টাম্পে সাক্ষর দিতে বলে। আম সাক্ষর দিতে রাজি না হওয়ায় আমাকে মারধর করে এবং আমাকে আমার মেয়েকে চিকিৎসা করাতে নিষেধ করে মাদবরেরা। মেয়ের অবস্থা খারাপ দেখে পুকুরিয়া বাজারে গিয়ে একটি ঔষধের দোকান থেকে কিছু ঔষধ কিনে মেয়েকে খাওয়াই। বর্তমানে মেয়েটা কিছুটা সুস্থ হয়েছে। আজকে দুপুরে আমার বাড়িতে বিএনপির উপজেলার নেতৃবৃন্দ ও সাংবাদিক সহ গ্রামবাসী আমাদের পাশে দাড়িয়েছে।
এ ব্যাপারে ধর্ষক দাদা দেলোয়ার মোল্লার ঘরে তালা মেরে গা-ঢাকা দিয়েছে। বর্তমানে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়ায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয় নাই।
এ ব্যাপারে গ্রামবাসী বলেন, হরুপদিয়া গ্রামের কিছু মাদবররা এঘটনা গোপনে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছিল । তবে ঘটনার সাথে জড়িত দেলোয়ার মোল্লাকে ২ লাখ টাকা জরিমানা করেছে স্থানীয় মাদবরেরা। মেয়ের বাবা টাকা না নেওয়ায় তাকে মারধর করেছে দেলোয়ারের লোকজন। পুলিশ আসার সংবাদ পেয়ে এলাকার প্রভাবশালী মাদবরেরা গা-ঢাকা দিয়েছে। আমরা গ্রামবাসী দেলোয়ারের বিচার সহ শাস্তি দাবী করছি। শিশুর বাবা অত্যন্ত গরিব মানুষ। পরের খেতে কিষান দেয়। ন্যায় বিচারের স্বার্থে গ্রামবাসী শিশুর পাশে দাড়িয়েছি।
এ ব্যাপারে ভাঙ্গা থানার ওসি মোঃ আশরাফ হোসেন জানান, বুধবার বেলা তিনটার দিকে ধর্ষণের ঘটনার একটি সংবাদ পেয়ে ভাঙ্গা উপজেলার নূরুল্লাগঞ্জ ইউনিয়নের হরুপদিয়া গ্রামে রবিউলের বাড়িতে পৌছাই। ভিকটিম শিশু ও তার মা-বাবার জবানবন্দি রেকর্ড করি। এরপর তাদের সকলকে থানায় নিয়ে আসি। এ ঘটনার আজ রাতে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।